1. admin@dailybijoysongbad.com : admin :
  2. asanurhossain23@gmail.com : Bijoy Songbad : Bijoy Songbad
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:২০ অপরাহ্ন

বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলেও ভাড়া করা ভবনে পাঠদান

দৈনিক বিজয় সংবাদ ডেস্ক :
  • আপডেট সময় : সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৩ বার পঠিত
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলেও ভাড়া করা ভবনে পাঠদান সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি বান্দরবান জেলার সুয়ালক ইউনিয়নে একশ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে পাবলিক-প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ‘বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়’। তবে নামে পাবলিক-প্রাইভেট হলেও এর পরতে পরতে রয়েছে সরকারি শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অবকাঠামো। ‘বান্দরবান শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ এবং ‘জেলা পরিষদ’র এক সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী এর ২৫ ভাগ মালিকানা পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং ৭৫ ভাগ শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনায় এই দুই প্রতিষ্ঠানের তেমন কোনো ভূমিকাই নেই। বরং শুরু থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড থেকে শুরু করে জমির বন্দোবস্ত এবং অন্যান্য কার্যক্রমে রাজনৈতিক আধিপত্যের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, সরকারি অর্থয়ানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মিত হলেও অর্থাভাবে এখানে লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পাহাড়ের হাজারো শিক্ষার্থী। অভিযোগ উঠেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং মন্ত্রী হওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২১ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে নিয়ে গঠন করেছিলেন ট্রাস্টি বোর্ড। এই বোর্ডের চেয়ারম্যান হন বীর বাহাদুর উশৈসিং নিজেই। এর পর প্রভাব বিস্তার করে নামমাত্র মূল্যে জোরপূর্বক দখলে নেন একশ একর জমি। এমনকি পরবর্তী সময়ে প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে এই জমি বন্দোবস্ত (খাস) দিতেও বাধ্য করানো হয়। এর পর সরকারি বিভিন্ন দফতর থেকে বরাদ্দ নেন শত কোটি টাকা। আর সেই টাকায় গড়ে তোলেন বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়। অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় নির্মিত হলেও বেসরকারির আদল পাওয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন না এলাকার দরিদ্র পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। সেজন্য শিক্ষার মানোন্নয়নে এটিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সেইসঙ্গে তদন্ত করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তারা। স্থানীয়রা জানান, ট্রাস্ট বোর্ড গঠনের পর সবাই মিলে স্থানীয় প্রশাসনকে চাপের মুখে ফেলে বন্দোবস্তের নামে (খাস) সরকারিভাবে দখলে নেন কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের একশ একর জমি। আর এগুলো দখলে নিতে সেখানকার মালিকদের জমি ছাড়তে বাধ্য করা হয় প্রশাসনিকভাবেই। পরবর্তী সময়ে সে জায়গায় সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে নির্মাণ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন, হোস্টেল, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এসব কাজের ভিত্তি স্থাপন করেন সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর নিজেই। বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাস্টি বোর্ডে চেয়ারম্যান বীর বাহাদুর উশৈসিং ছাড়াও যারা রয়েছেন তারা হলেন-কো চেয়ারম্যান সাবেক পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, সদস্য-সুদত্ত চাকমা, বি. জে. শামো, সুলতান উদ্দিন ইকবাল (বীর প্রতীক), অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. আমির মো. নসরুল্লাহ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের সদস্য তিং তিং ম্যা, মো. মহসিন চৌধুরী, পূরবীর মালিক, আওয়ামী লীগ নেতা কাজল কান্তি দাশ ও অমল কান্তি দাশ, অধ্যাপক সরওয়ার জাহান, ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুছ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য ল²ীপদ দাশ, ডা. অং চা লু, সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মংতে ঝ, ইঞ্জিনিয়ার মো. শহীদুল মোস্তফা, মো. মোজাম্মেল হক বাহাদুর ও ড. মোহাম্মদ নুরুল আবছার। যে চুক্তির মাধ্যমে গড়ে উঠেছে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালে বান্দরবান শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এবং জেলা পরিষদের মধ্যে এক সমঝোতা চুক্তি হয়। এর পর ২১ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বিশ্ববিদ্যালয়। যার ২৫ ভাগ মালিকানা পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং ৭৫ ভাগ শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের। চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মাণের জন্য শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ৭৫ শতাংশ বিনিয়োগের কথা ছিল। কিন্তু ট্রাস্ট বোর্ডের অধিকাংশ সদস্যরা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা হওয়ায় নিজেরা কোনো ধরনের বিনিয়োগ করেননি। উল্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সরকারের বিভিন্ন দফতর থেকে কয়েকশ’ কোটি টাকা বরাদ্দ নেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারিভাবে কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের একশ একর জমির বন্দোবস্ত, এলজিইডির অর্থায়নে ছয় কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে সড়ক, ড্রেন ও ক্যাম্পাস উন্নয়ন, উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নয় কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে বহুতল একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও জেলা পরিষদের অর্থায়নে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে হোস্টেলসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারি অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নির্মিত হলেও এর সুফল ভোগ করছে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরাই। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ থাকার পর বিশ্ববিদ্যালটি বেসরকারি হওয়ায় সুবিধা নিতে পারছে না সরকার কিংবা পাহাড়ে বসবাসরত দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা। তাই পাহাড়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছে এলাকার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজ। বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এম নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী পরিচালিত একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক এই বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন লাভ করে। এটি দেশের পার্বত্য অঞ্চলের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়।’ এলাকাবাসী ও পার্বত্য জেলা পরিষদ যা বলছে বান্দরবান বাজার এলাকার বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘যে লক্ষ্য নিয়ে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়টি গড়ে উঠেছিল, সেটি আসলে পূরণ হচ্ছে না। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে গড়ে তোলা হলেও এটি কেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হবে? আমি আশা করব, এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হবে। এতে এলাকার শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবে।’ বান্দরবান সদরের আলী হায়দার বলেন, ‘এখানে যে একশ একর জায়গার বন্দোবস্ত নিয়েছে তা মূলত এলাকার অসহায় গরিব জনগণের। কমিটির লোকজন নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে এবং প্রশাসনকে দিয়ে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে জায়গাগুলো দখলে নিয়েছে। এতে অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়েছে। বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকারের উচিত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া।’ রাসেল নামের এক কলেজছাত্র এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বান্দরবানে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়েছে তা সরকারি টাকায় গড়ে তোলা। কিন্তু এটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় আমরা লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছি না। যদি এটি সরকারি হয় তবে আমরাও সুযোগ পাব।’ এ বিষয়ে বান্দরবান জজ কোর্টের আইনজীবী আবু জাফর বলেন, ‘প্রাইভেট ও পাবলিক পার্টনারপশিপে কাজ করার সুযোগ বাংলাদেশের কোনো আইনে নাই। যৌথভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার করার মতো আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। যেটি শুনেছি সেটি হচ্ছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়টি জেলা পরিষদের সঙ্গে পার্টনারশিপে চলছে। যদিও তা সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় করা হয়েছে। কাজেই সরকার চাইলে এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে পারে।’ এ প্রসঙ্গে বান্দরবান সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই বলেন, ‘আমি সম্প্রতি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছি। বান্দরবানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মিত হয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। যেহেতু এটি সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় করা হয়েছে তাই আমরা অচিরেই এটিকে পাবলিকে রূপান্তরের চেষ্টা করব। যেভাবে জনগণের কল্যাণ হয় সেভাবেই সংস্কারের উদ্যোগ নেব।’ উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রæয়ারী বান্দরবান সদরের পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জেলা পরিষদের অস্থায়ী ভবনে শুরু হয় বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। বর্তমানে সুয়ালক ইউনিয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে ছয়টি বিভাগে মোট ৩৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি মোবাইল নম্বর ০১৮১৮-২৭২০৯৩ তারিখ:-০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং।
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলেও ভাড়া করা ভবনে পাঠদান সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি বান্দরবান জেলার সুয়ালক ইউনিয়নে একশ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে পাবলিক-প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ‘বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়’। তবে নামে পাবলিক-প্রাইভেট হলেও এর পরতে পরতে রয়েছে সরকারি শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অবকাঠামো। ‘বান্দরবান শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ এবং ‘জেলা পরিষদ’র এক সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী এর ২৫ ভাগ মালিকানা পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং ৭৫ ভাগ শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনায় এই দুই প্রতিষ্ঠানের তেমন কোনো ভূমিকাই নেই। বরং শুরু থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড থেকে শুরু করে জমির বন্দোবস্ত এবং অন্যান্য কার্যক্রমে রাজনৈতিক আধিপত্যের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, সরকারি অর্থয়ানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মিত হলেও অর্থাভাবে এখানে লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পাহাড়ের হাজারো শিক্ষার্থী। অভিযোগ উঠেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং মন্ত্রী হওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২১ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে নিয়ে গঠন করেছিলেন ট্রাস্টি বোর্ড। এই বোর্ডের চেয়ারম্যান হন বীর বাহাদুর উশৈসিং নিজেই। এর পর প্রভাব বিস্তার করে নামমাত্র মূল্যে জোরপূর্বক দখলে নেন একশ একর জমি। এমনকি পরবর্তী সময়ে প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে এই জমি বন্দোবস্ত (খাস) দিতেও বাধ্য করানো হয়। এর পর সরকারি বিভিন্ন দফতর থেকে বরাদ্দ নেন শত কোটি টাকা। আর সেই টাকায় গড়ে তোলেন বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়। অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় নির্মিত হলেও বেসরকারির আদল পাওয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন না এলাকার দরিদ্র পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। সেজন্য শিক্ষার মানোন্নয়নে এটিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সেইসঙ্গে তদন্ত করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তারা। স্থানীয়রা জানান, ট্রাস্ট বোর্ড গঠনের পর সবাই মিলে স্থানীয় প্রশাসনকে চাপের মুখে ফেলে বন্দোবস্তের নামে (খাস) সরকারিভাবে দখলে নেন কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের একশ একর জমি। আর এগুলো দখলে নিতে সেখানকার মালিকদের জমি ছাড়তে বাধ্য করা হয় প্রশাসনিকভাবেই। পরবর্তী সময়ে সে জায়গায় সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে নির্মাণ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন, হোস্টেল, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এসব কাজের ভিত্তি স্থাপন করেন সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর নিজেই। বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাস্টি বোর্ডে চেয়ারম্যান বীর বাহাদুর উশৈসিং ছাড়াও যারা রয়েছেন তারা হলেন-কো চেয়ারম্যান সাবেক পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, সদস্য-সুদত্ত চাকমা, বি. জে. শামো, সুলতান উদ্দিন ইকবাল (বীর প্রতীক), অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. আমির মো. নসরুল্লাহ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের সদস্য তিং তিং ম্যা, মো. মহসিন চৌধুরী, পূরবীর মালিক, আওয়ামী লীগ নেতা কাজল কান্তি দাশ ও অমল কান্তি দাশ, অধ্যাপক সরওয়ার জাহান, ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুছ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য ল²ীপদ দাশ, ডা. অং চা লু, সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মংতে ঝ, ইঞ্জিনিয়ার মো. শহীদুল মোস্তফা, মো. মোজাম্মেল হক বাহাদুর ও ড. মোহাম্মদ নুরুল আবছার। যে চুক্তির মাধ্যমে গড়ে উঠেছে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালে বান্দরবান শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এবং জেলা পরিষদের মধ্যে এক সমঝোতা চুক্তি হয়। এর পর ২১ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বিশ্ববিদ্যালয়। যার ২৫ ভাগ মালিকানা পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং ৭৫ ভাগ শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের। চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মাণের জন্য শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ৭৫ শতাংশ বিনিয়োগের কথা ছিল। কিন্তু ট্রাস্ট বোর্ডের অধিকাংশ সদস্যরা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা হওয়ায় নিজেরা কোনো ধরনের বিনিয়োগ করেননি। উল্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সরকারের বিভিন্ন দফতর থেকে কয়েকশ’ কোটি টাকা বরাদ্দ নেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারিভাবে কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের একশ একর জমির বন্দোবস্ত, এলজিইডির অর্থায়নে ছয় কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে সড়ক, ড্রেন ও ক্যাম্পাস উন্নয়ন, উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নয় কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে বহুতল একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও জেলা পরিষদের অর্থায়নে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে হোস্টেলসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারি অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নির্মিত হলেও এর সুফল ভোগ করছে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরাই। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ থাকার পর বিশ্ববিদ্যালটি বেসরকারি হওয়ায় সুবিধা নিতে পারছে না সরকার কিংবা পাহাড়ে বসবাসরত দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা। তাই পাহাড়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছে এলাকার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজ। বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এম নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী পরিচালিত একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক এই বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন লাভ করে। এটি দেশের পার্বত্য অঞ্চলের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়।’ এলাকাবাসী ও পার্বত্য জেলা পরিষদ যা বলছে বান্দরবান বাজার এলাকার বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘যে লক্ষ্য নিয়ে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়টি গড়ে উঠেছিল, সেটি আসলে পূরণ হচ্ছে না। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে গড়ে তোলা হলেও এটি কেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হবে? আমি আশা করব, এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হবে। এতে এলাকার শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবে।’ বান্দরবান সদরের আলী হায়দার বলেন, ‘এখানে যে একশ একর জায়গার বন্দোবস্ত নিয়েছে তা মূলত এলাকার অসহায় গরিব জনগণের। কমিটির লোকজন নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে এবং প্রশাসনকে দিয়ে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে জায়গাগুলো দখলে নিয়েছে। এতে অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়েছে। বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকারের উচিত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া।’ রাসেল নামের এক কলেজছাত্র এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বান্দরবানে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়েছে তা সরকারি টাকায় গড়ে তোলা। কিন্তু এটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় আমরা লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছি না। যদি এটি সরকারি হয় তবে আমরাও সুযোগ পাব।’ এ বিষয়ে বান্দরবান জজ কোর্টের আইনজীবী আবু জাফর বলেন, ‘প্রাইভেট ও পাবলিক পার্টনারপশিপে কাজ করার সুযোগ বাংলাদেশের কোনো আইনে নাই। যৌথভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার করার মতো আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। যেটি শুনেছি সেটি হচ্ছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়টি জেলা পরিষদের সঙ্গে পার্টনারশিপে চলছে। যদিও তা সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় করা হয়েছে। কাজেই সরকার চাইলে এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে পারে।’ এ প্রসঙ্গে বান্দরবান সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই বলেন, ‘আমি সম্প্রতি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছি। বান্দরবানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মিত হয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। যেহেতু এটি সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় করা হয়েছে তাই আমরা অচিরেই এটিকে পাবলিকে রূপান্তরের চেষ্টা করব। যেভাবে জনগণের কল্যাণ হয় সেভাবেই সংস্কারের উদ্যোগ নেব।’ উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রæয়ারী বান্দরবান সদরের পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জেলা পরিষদের অস্থায়ী ভবনে শুরু হয় বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। বর্তমানে সুয়ালক ইউনিয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে ছয়টি বিভাগে মোট ৩৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি মোবাইল নম্বর ০১৮১৮-২৭২০৯৩ তারিখ:-০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং।
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলেও ভাড়া করা ভবনে পাঠদানসাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি 
বান্দরবান জেলার সুয়ালক ইউনিয়নে একশ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে পাবলিক-প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ‘বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়’। তবে নামে পাবলিক-প্রাইভেট হলেও এর পরতে পরতে রয়েছে সরকারি শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অবকাঠামো। ‘বান্দরবান শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ এবং ‘জেলা পরিষদ’র এক সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী এর ২৫ ভাগ মালিকানা পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং ৭৫ ভাগ শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনায় এই দুই প্রতিষ্ঠানের তেমন কোনো ভূমিকাই নেই। বরং শুরু থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড থেকে শুরু করে জমির বন্দোবস্ত এবং অন্যান্য কার্যক্রমে রাজনৈতিক আধিপত্যের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, সরকারি অর্থয়ানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মিত হলেও অর্থাভাবে এখানে লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পাহাড়ের হাজারো শিক্ষার্থী। 
অভিযোগ উঠেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং মন্ত্রী হওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২১ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে নিয়ে গঠন করেছিলেন ট্রাস্টি বোর্ড। এই বোর্ডের চেয়ারম্যান হন বীর বাহাদুর উশৈসিং নিজেই। এর পর প্রভাব বিস্তার করে নামমাত্র মূল্যে জোরপূর্বক দখলে নেন একশ একর জমি। এমনকি পরবর্তী সময়ে প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে এই জমি বন্দোবস্ত (খাস) দিতেও বাধ্য করানো হয়। এর পর সরকারি বিভিন্ন দফতর থেকে বরাদ্দ নেন শত কোটি টাকা। আর সেই টাকায় গড়ে তোলেন বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়।
অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় নির্মিত হলেও বেসরকারির আদল পাওয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন না এলাকার দরিদ্র পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। সেজন্য শিক্ষার মানোন্নয়নে এটিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সেইসঙ্গে তদন্ত করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তারা। 
স্থানীয়রা জানান, ট্রাস্ট বোর্ড গঠনের পর সবাই মিলে স্থানীয় প্রশাসনকে চাপের মুখে ফেলে বন্দোবস্তের নামে (খাস) সরকারিভাবে দখলে নেন কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের একশ একর জমি। আর এগুলো দখলে নিতে সেখানকার মালিকদের জমি ছাড়তে বাধ্য করা হয় প্রশাসনিকভাবেই। পরবর্তী সময়ে সে জায়গায় সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে নির্মাণ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন, হোস্টেল, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এসব কাজের ভিত্তি স্থাপন করেন সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর নিজেই।
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাস্টি বোর্ডে চেয়ারম্যান বীর বাহাদুর উশৈসিং ছাড়াও যারা রয়েছেন তারা হলেন-কো চেয়ারম্যান সাবেক পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, সদস্য-সুদত্ত চাকমা, বি. জে. শামো, সুলতান উদ্দিন ইকবাল (বীর প্রতীক), অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. আমির মো. নসরুল্লাহ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের সদস্য তিং তিং ম্যা, মো. মহসিন চৌধুরী, পূরবীর মালিক, আওয়ামী লীগ নেতা কাজল কান্তি দাশ ও অমল কান্তি দাশ, অধ্যাপক সরওয়ার জাহান, ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুছ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য ল²ীপদ দাশ, ডা. অং চা লু, সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মংতে ঝ, ইঞ্জিনিয়ার মো. শহীদুল মোস্তফা, মো. মোজাম্মেল হক বাহাদুর ও ড. মোহাম্মদ নুরুল আবছার।
যে চুক্তির মাধ্যমে গড়ে উঠেছে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালে বান্দরবান শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এবং জেলা পরিষদের মধ্যে এক সমঝোতা চুক্তি হয়। এর পর ২১ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বিশ্ববিদ্যালয়। যার ২৫ ভাগ মালিকানা পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং ৭৫ ভাগ শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের। চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মাণের জন্য শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ৭৫ শতাংশ বিনিয়োগের কথা ছিল। কিন্তু ট্রাস্ট বোর্ডের অধিকাংশ সদস্যরা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা হওয়ায় নিজেরা কোনো ধরনের বিনিয়োগ করেননি। উল্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সরকারের বিভিন্ন দফতর থেকে কয়েকশ’ কোটি টাকা বরাদ্দ নেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারিভাবে কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের একশ একর জমির বন্দোবস্ত, এলজিইডির অর্থায়নে ছয় কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে সড়ক, ড্রেন ও ক্যাম্পাস উন্নয়ন, উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নয় কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে বহুতল একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও জেলা পরিষদের অর্থায়নে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে হোস্টেলসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
সরকারি অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নির্মিত হলেও এর সুফল ভোগ করছে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরাই। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ থাকার পর বিশ্ববিদ্যালটি বেসরকারি হওয়ায় সুবিধা নিতে পারছে না সরকার কিংবা পাহাড়ে বসবাসরত দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা। তাই পাহাড়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছে এলাকার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজ।
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এম নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী পরিচালিত একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক এই বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন লাভ করে। এটি দেশের পার্বত্য অঞ্চলের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়।’
এলাকাবাসী ও পার্বত্য জেলা পরিষদ যা বলছে
বান্দরবান বাজার এলাকার বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘যে লক্ষ্য নিয়ে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়টি গড়ে উঠেছিল, সেটি আসলে পূরণ হচ্ছে না। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে গড়ে তোলা হলেও এটি কেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হবে? আমি আশা করব, এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হবে। এতে এলাকার শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবে।’
বান্দরবান সদরের আলী হায়দার বলেন, ‘এখানে যে একশ একর জায়গার বন্দোবস্ত নিয়েছে তা মূলত এলাকার অসহায় গরিব জনগণের। কমিটির লোকজন নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে এবং প্রশাসনকে দিয়ে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে জায়গাগুলো দখলে নিয়েছে। এতে অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়েছে। বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকারের উচিত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া।’
রাসেল নামের এক কলেজছাত্র এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বান্দরবানে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়েছে তা সরকারি টাকায় গড়ে তোলা। কিন্তু এটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় আমরা লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছি না। যদি এটি সরকারি হয় তবে আমরাও সুযোগ পাব।’
এ বিষয়ে বান্দরবান জজ কোর্টের আইনজীবী আবু জাফর বলেন, ‘প্রাইভেট ও পাবলিক পার্টনারপশিপে কাজ করার সুযোগ বাংলাদেশের কোনো আইনে নাই। যৌথভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার করার মতো আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। যেটি শুনেছি সেটি হচ্ছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়টি জেলা পরিষদের সঙ্গে পার্টনারশিপে চলছে। যদিও তা সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় করা হয়েছে। কাজেই সরকার চাইলে এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে বান্দরবান সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই বলেন, ‘আমি সম্প্রতি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছি। বান্দরবানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মিত হয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। যেহেতু এটি সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় করা হয়েছে তাই আমরা অচিরেই এটিকে পাবলিকে রূপান্তরের চেষ্টা করব। যেভাবে জনগণের কল্যাণ হয় সেভাবেই সংস্কারের উদ্যোগ নেব।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রæয়ারী বান্দরবান সদরের পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জেলা পরিষদের অস্থায়ী ভবনে শুরু হয় বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। বর্তমানে সুয়ালক ইউনিয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে ছয়টি বিভাগে মোট ৩৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

সাইফুল ইসলাম: 
বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি 
মোবাইল নম্বর ০১৮১৮-২৭২০৯৩ 
তারিখ:-০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং।

বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলেও ভাড়া করা ভবনে পাঠদান
সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি
বান্দরবান জেলার সুয়ালক ইউনিয়নে একশ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে পাবলিক-প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ‘বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়’। তবে নামে পাবলিক-প্রাইভেট হলেও এর পরতে পরতে রয়েছে সরকারি শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অবকাঠামো। ‘বান্দরবান শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ এবং ‘জেলা পরিষদ’র এক সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী এর ২৫ ভাগ মালিকানা পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং ৭৫ ভাগ শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনায় এই দুই প্রতিষ্ঠানের তেমন কোনো ভূমিকাই নেই। বরং শুরু থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড থেকে শুরু করে জমির বন্দোবস্ত এবং অন্যান্য কার্যক্রমে রাজনৈতিক আধিপত্যের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, সরকারি অর্থয়ানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মিত হলেও অর্থাভাবে এখানে লেখাপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন পাহাড়ের হাজারো শিক্ষার্থী।
অভিযোগ উঠেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং মন্ত্রী হওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২১ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে নিয়ে গঠন করেছিলেন ট্রাস্টি বোর্ড। এই বোর্ডের চেয়ারম্যান হন বীর বাহাদুর উশৈসিং নিজেই। এর পর প্রভাব বিস্তার করে নামমাত্র মূল্যে জোরপূর্বক দখলে নেন একশ একর জমি। এমনকি পরবর্তী সময়ে প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে এই জমি বন্দোবস্ত (খাস) দিতেও বাধ্য করানো হয়। এর পর সরকারি বিভিন্ন দফতর থেকে বরাদ্দ নেন শত কোটি টাকা। আর সেই টাকায় গড়ে তোলেন বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়।
অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় নির্মিত হলেও বেসরকারির আদল পাওয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন না এলাকার দরিদ্র পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। সেজন্য শিক্ষার মানোন্নয়নে এটিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সেইসঙ্গে তদন্ত করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, ট্রাস্ট বোর্ড গঠনের পর সবাই মিলে স্থানীয় প্রশাসনকে চাপের মুখে ফেলে বন্দোবস্তের নামে (খাস) সরকারিভাবে দখলে নেন কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের একশ একর জমি। আর এগুলো দখলে নিতে সেখানকার মালিকদের জমি ছাড়তে বাধ্য করা হয় প্রশাসনিকভাবেই। পরবর্তী সময়ে সে জায়গায় সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে নির্মাণ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন, হোস্টেল, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এসব কাজের ভিত্তি স্থাপন করেন সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর নিজেই।
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাস্টি বোর্ডে চেয়ারম্যান বীর বাহাদুর উশৈসিং ছাড়াও যারা রয়েছেন তারা হলেন-কো চেয়ারম্যান সাবেক পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, সদস্য-সুদত্ত চাকমা, বি. জে. শামো, সুলতান উদ্দিন ইকবাল (বীর প্রতীক), অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. আমির মো. নসরুল্লাহ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের সদস্য তিং তিং ম্যা, মো. মহসিন চৌধুরী, পূরবীর মালিক, আওয়ামী লীগ নেতা কাজল কান্তি দাশ ও অমল কান্তি দাশ, অধ্যাপক সরওয়ার জাহান, ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুছ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য ল²ীপদ দাশ, ডা. অং চা লু, সাবেক সিভিল সার্জন ডা. মংতে ঝ, ইঞ্জিনিয়ার মো. শহীদুল মোস্তফা, মো. মোজাম্মেল হক বাহাদুর ও ড. মোহাম্মদ নুরুল আবছার।
যে চুক্তির মাধ্যমে গড়ে উঠেছে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালে বান্দরবান শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এবং জেলা পরিষদের মধ্যে এক সমঝোতা চুক্তি হয়। এর পর ২১ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বিশ্ববিদ্যালয়। যার ২৫ ভাগ মালিকানা পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং ৭৫ ভাগ শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের। চুক্তি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মাণের জন্য শিক্ষা ও উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ৭৫ শতাংশ বিনিয়োগের কথা ছিল। কিন্তু ট্রাস্ট বোর্ডের অধিকাংশ সদস্যরা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা হওয়ায় নিজেরা কোনো ধরনের বিনিয়োগ করেননি। উল্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে সরকারের বিভিন্ন দফতর থেকে কয়েকশ’ কোটি টাকা বরাদ্দ নেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারিভাবে কয়েকশ কোটি টাকা মূল্যের একশ একর জমির বন্দোবস্ত, এলজিইডির অর্থায়নে ছয় কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে সড়ক, ড্রেন ও ক্যাম্পাস উন্নয়ন, উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নয় কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে বহুতল একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও জেলা পরিষদের অর্থায়নে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে হোস্টেলসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
সরকারি অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নির্মিত হলেও এর সুফল ভোগ করছে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরাই। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ থাকার পর বিশ্ববিদ্যালটি বেসরকারি হওয়ায় সুবিধা নিতে পারছে না সরকার কিংবা পাহাড়ে বসবাসরত দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা। তাই পাহাড়ে শিক্ষার মানোন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছে এলাকার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজ।
বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এম নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী পরিচালিত একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক এই বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন লাভ করে। এটি দেশের পার্বত্য অঞ্চলের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়।’
এলাকাবাসী ও পার্বত্য জেলা পরিষদ যা বলছে
বান্দরবান বাজার এলাকার বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘যে লক্ষ্য নিয়ে বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়টি গড়ে উঠেছিল, সেটি আসলে পূরণ হচ্ছে না। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে গড়ে তোলা হলেও এটি কেন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হবে? আমি আশা করব, এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হবে। এতে এলাকার শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবে।’
বান্দরবান সদরের আলী হায়দার বলেন, ‘এখানে যে একশ একর জায়গার বন্দোবস্ত নিয়েছে তা মূলত এলাকার অসহায় গরিব জনগণের। কমিটির লোকজন নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে এবং প্রশাসনকে দিয়ে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে জায়গাগুলো দখলে নিয়েছে। এতে অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়েছে। বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকারের উচিত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া।’
রাসেল নামের এক কলেজছাত্র এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বান্দরবানে যে বিশ্ববিদ্যালয়টি হয়েছে তা সরকারি টাকায় গড়ে তোলা। কিন্তু এটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় আমরা লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছি না। যদি এটি সরকারি হয় তবে আমরাও সুযোগ পাব।’
এ বিষয়ে বান্দরবান জজ কোর্টের আইনজীবী আবু জাফর বলেন, ‘প্রাইভেট ও পাবলিক পার্টনারপশিপে কাজ করার সুযোগ বাংলাদেশের কোনো আইনে নাই। যৌথভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার করার মতো আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। যেটি শুনেছি সেটি হচ্ছে, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়টি জেলা পরিষদের সঙ্গে পার্টনারশিপে চলছে। যদিও তা সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় করা হয়েছে। কাজেই সরকার চাইলে এটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে বান্দরবান সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই বলেন, ‘আমি সম্প্রতি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছি। বান্দরবানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মিত হয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। যেহেতু এটি সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় করা হয়েছে তাই আমরা অচিরেই এটিকে পাবলিকে রূপান্তরের চেষ্টা করব। যেভাবে জনগণের কল্যাণ হয় সেভাবেই সংস্কারের উদ্যোগ নেব।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ ফেব্রæয়ারী বান্দরবান সদরের পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জেলা পরিষদের অস্থায়ী ভবনে শুরু হয় বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। বর্তমানে সুয়ালক ইউনিয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে ছয়টি বিভাগে মোট ৩৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
সাইফুল ইসলাম:
বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি
মোবাইল নম্বর ০১৮১৮-২৭২০৯৩
তারিখ:-০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং।

Facebook Comments Box
এই ক্যাটাগরির আরও খবর